বর্ডার ক্রস বাইক কোথায় পাওয়া যাবে

বাংলাদেশের যুবকেরা বাইক পছন্দ করেন না এমন যুবক খুঁজে পাওয়া যাবে না, সবারই একটা স্বপ্ন থাকে ভালো একটি বাইক কিনবে। কিন্তু বাজেট না থাকাই আমরা চাইলেই কিন্তু আমাদের স্বপ্নের বাইকটি কিনতে পারিনা। আর এই জন্যই অনেকে কম বাজেটে বর্ডার ক্রস বাইক কিনতে চান, কিন্তু কোথায় বর্ডার ক্রস বাইক পাওয়া যায় এটা না জানার কারণে অনেকেই প্রতারণার শিকার হন। তাই আজকে আমরা আপনাদেরকে জানিয়ে দিব বাংলাদেশের কোথায় কোথায় বর্ডার ক্রস বাইক পাওয়া যায়, এবং সেই সাথে কিভাবে আপনি এই বর্ডার ক্রস বাইক একদম নিরাপদে কিনবেন সেই ব্যাপারে। তাই ধৈর্য ধরে এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

বর্ডার ক্রস বাইক কি?

বর্ডার ক্রস বাইক হল যে সমস্ত বাইক অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঢুকে বা সরকারের ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে এগুলোকেই বর্ডার ক্রস বাইক বলা হয়। এক কথায় বলা যেতে পারে ইন্ডিয়া থেকে যে সকল গাড়ি অবৈধভাবে বাংলাদেশে আসে সেই সমস্ত বাইকগুলোকে টানা গাড়ি কিংবা বর্ডার ক্রস বাইক বলা হয়।


বর্ডার ক্রস বাইক কোথায় পাওয়া যায়?

যেহেতু এই গাড়িগুলো অবৈধভাবে বাংলাদেশের সরকারের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঢুকে সেহেতু বোঝাই যাচ্ছে বর্ডার এলাকা থেকে এই গাড়িগুলো পাওয়া যাবে। আর বর্ডার ক্রস বাইক পাওয়ার সবচাইতে বেস্ট জায়গা হল - যশোর বেনাপোল।

মূলত যশোর বেনাপোলে আপনি হাজার হাজার অহরহ বর্ডার ক্রস বাইক কিনতে পারবেন খুব সহজেই কোন ঝামেলা ছাড়াই, শুধু যশোর বেনাপোল নয় আপনি চাইলেই কক্সবাজার,খাগড়াছড়ি,বান্দরবান,রাঙামাটি,সিলেট সহ ইত্যাদি জেলা থেকে এ সমস্ত বর্ডার ক্রস বাইক কিনতে পারবেন।


বর্ডার ক্রস বাইক রেজিস্ট্রেশন বা বৈধ করার উপায়

অনেকেই বর্ডার ক্রস বাইক কেনার পর ভাবেন এই সমস্ত বাইক কি বাংলাদেশের বিআরটিসি থেকে কাগজ করে নেওয়া যায়, আপনার মনেও যদি এরকম প্রশ্ন ঘুরপাক খায় তাহলে বলব হ্যাঁ অবশ্যই এই সমস্ত বাইক গুলি আপনি পরবর্তীতে বৈধ করে নিতে পারবেন। তবে আপনি যখন একটি বর্ডার ক্রস বাইক কিনবেন সেক্ষেত্রে একটি জিনিস চেক করে নিবেন সেটি হল বাইকটির সাথে যেন অবশ্যই কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র থাকে।


বর্ডার ক্রস বাইক রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম

আপনার কাছে যদি বাইক এর কাস্টম কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র পেপার থাকে তাহলে আপনি খুব সহজেই পরবর্তীতে বিআরটি থেকে আপনার গাড়ির পেপারস করে নিতে পারবেন, এবং খুব সহজেই গাড়িটি বৈধ করে নিতে পারবেন এবং বাংলাদেশে অন্যান্য বাইকের মতোই কাগজপত্র কমপ্লিট করে সারা বাংলাদেশ বাইকটি চালাতে পারবেন কোন সমস্যা ছাড়াই। আর এটি চাইলে আপনি যেই শোরুম থেকে বর্ডার ক্রস বাইকটি ক্রয় করবেন ওই শোরুমের যোগাযোগ করেই আপনার গাড়িটি খুব সহজেই বৈধ করে নিতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে বাইক বুঝে আপনাকে টাকা দিতে হবে গাড়ি বৈধ করার জন্য।


বর্ডার ক্রস বাইক কেনার আগে যে সমস্ত সাবধানতা অবলম্বন করবেন?

বর্তমানে সময়ে ফেসবুক সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে বর্ডার ক্রস বাইক বিক্রির নামে প্রতারণা করছে গ্রাহকের সাথে, তাই এ বিষয়ে অবশ্যই আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। অনেকেই আপনাকে হোম ডেলিভারি দিবে বলে টাকা নিয়ে প্রতারণা করছে। তাই এই চক্র থেকে সব সময় সাবধান থাকতে হবে। একটি বর্ডার ক্রস বাইক কেনার আগে অবশ্যই যার কাছ থেকে কিনছেন বা যেই শোরুম থেকে কিনছেন সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভালো করে যাচাই করে নিবেন। ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করার পর যদি আপনার মনে হয় যে সব কিছু সঠিক আছে তাহলে পরবর্তী স্টেপে যাবেন।


কেউ টাকা চাইলে কোন ভাবেই আগে টাকা দিবেন না বা হোম ডেলিভারি নিবেন না, আপনি ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে যার কাছ থেকে বাইক কিনবেন তার লোকেশন জেনে নিবেন এবং তার লোকেশন গিয়ে বাইক দেখে শুনে বাইক কিনে ইস্টাম করে তারপর পেমেন্ট করবেন। আর অবশ্যই তার লোকেশনে যখন যাবেন তখন বাইক কেনার টাকা নিজের সাথে করে নিয়ে যাবেন না, এক্ষেত্রে যেকোনো একটা ব্যাংকে টাকা রেখে তারপর যেতে পারেন। আপনার বাইক আপনাকে বুঝিয়ে দিবে এবং আপনি ইস্টাম করে সই করে নিবেন তারপরেই ব্যাংক থেকে টাকা উইথড্রো করে বাইকের টাকা পরিশোধ করবেন। অবশ্যই এই বিষয়গুলো মেনে তারপর বর্ডার ক্রস বাইক কিনবেন, কারণ বর্ডার ক্রস বাইক কেনা বেচার নামে বাংলাদেশে অনেক প্রতারণা হচ্ছে তাই অবশ্যই সব সময় সাপধন্যতা অবলম্বন করবেন।


বর্ডার ক্রস বাইকের দাম কেমন হয়?

যেহেতু এই সমস্ত গাড়িগুলো ইন্ডিয়া থেকে অবৈধভাবে আসে তাই এই বাইকগুলোর দামও হাতের নাগালেই থাকে। আমি আপনাকে ধারণা দিতে পারি যে কোন বাইকের কেমন দাম হতে পারে, নিচে কিছু বাইকের নাম এবং প্রাইজের ব্যাপারে ধারণা দেওয়া হলো-


বর্ডার ক্রস বাইকের নাম:

বর্ডার ক্রস বাইকের দাম:

Apache 4v Abs

55,000 BDT

Apache RTR

50,000BDT

Honda CB Hornet

45,000BDT

Pulsar single disc

55,000BDT

Suzuki GSXR 150 Abs

85,000BDT

TVS Rider

35,000BDT

Yamaha R15 V3

90,000BDT

Yamaha MT15

70,000BDT

Yamaha FZS v3

70,000BDT


উপরের টেবিলে শুধুমাত্র এই সমস্ত বর্ডার ক্রস বাইকের দামের একটা ধারণা দেওয়া হয়েছে, তাই অবশ্যই কম বেশি হতে পারে তবে আহামরি না। আশা করছি আপনি খুব সহজেই জানতে পারলেন বর্ডার ক্রস বাইকের দাম এবং কোথা থেকে নিরাপদে এই বাইকগুলো ক্রয় করা যায় সেই ব্যাপারে।


শেষ কথা

এখানে আজকের মত পোস্টটি শেষ করছি, বর্ডার ক্রস বাইক সম্পর্কে আর কোন তথ্য জানার থাকলে অবশ্যই কমেন্ট সেকশনে জানাবেন, আমরা আপনাকে রিপ্লাই করে সেই প্রশ্নের উত্তরটি দিয়ে দিব আশা করছি, পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করে দিবেন। আর অবশ্যই মূল্যবান মতামত কমেন্ট সেকশনে জানাতে ভুলবেন না, আজকের মত এখানেই শেষ করছি ভালো থাকবেন ধন্যবাদ।